হৃদয় হোসাইন,নিজস্ব সংবাদদাতা:
যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পাবনার বেড়া উপজেলার কৈটোলা ইউনিয়নের আওয়ালবাঁধ নামক এলাকায় যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র। অবাধে বালু উত্তোলনের কারণে নদী পাড়ের গ্রামগুলোর বাসতবাড়ী, ফসলী জমি, তীর সংরক্ষণ বাঁধ ও পুরাতন বণ্যানিয়ন্ত্রন বাঁধ ভাঙনের হুমকীর মুখে পড়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ও জেল জরিমানাতে থামছে না অবৈধভাবে বালু উত্তেলন ও বিক্রি। বিনা পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় প্রভাবশালী বালুদস্যুরা জেল জরিমানা উপেক্ষা করে নদী থেকে বালু উত্তোলনসহ প্রকাশ্যে বেচা-কেনা অব্যহত রেখেছে। বালুদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না বলে স্থানীদের অভিযোগ।
বালুদস্যুরা ড্রেজার, ভলগেট, বোমামেশিন নামে উচ্চশক্তি সম্পন্ন ইঞ্জিন বসিয়ে নদীর তলদেশের গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় ভূস্তর ও নদীর বেড লেভেল (তলদেশ) এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। হুমকীর মুখে পড়েছে জলজপ্রাণী ও জীববৈচিত্র। জানা যায়, রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশীলদের প্রত্যক্ষ সমর্থনে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন চলছে।
বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ৫ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না।’ আইনের ৪ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হইলে, অথবা আবাসিক এলাকা হইতে সর্বনিম্ন ১ (এক) কিলোমিটার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সীমানার মধ্যে হইলে’ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। বার বার অভিযান করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধভাবে বাল উত্তোলন। এগুলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
স্থানীয়রা জানান, বালু সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা উপজেলার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তির মদদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে নদী ধ্বংস করে আসছে। প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিতে নানান কৌশল অবলম্বন করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরের ফসলি জমি ভাঙ্গনের আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন ও যন্ত্রাংশ ভাঙচুর বা উচ্ছেদ করলেও। দু-চার দিন পর আবার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু হয়। প্রশাসন যথাযথভাবে নজরদারি করে না।
এ বিষয় আরও জানতে মুঠোফোনে বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ এনও) মোরশেদুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply