হৃদয় হোসাইন-বেড়া,পাবনা:
এডিস এক প্রকার মশা। যেটি ডেঙ্গু ও পীতজ্বরের মতো মারাত্মক দুটি রোগের বাহক।এডিস মশার অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে পাবনার বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ড্রেনে জমা বৃষ্টির পানিতে ডিম পেরে বংশবিস্তার করছে এডিস মশা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে অসংখ্যা ডাবের খোসা,ড্রেনে এডিস মশার অসংখ্য লার্ভা দেখা যায়। পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়,বর্হি বিভাগ ও জরুরী বিভাগের পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় এবং বাগানে অসংখ্য মশা বিস্তার করছে। দিনে রাতে এসব মশা সেবা নিতে আসা রোগীদের কামড়াচ্ছে। ফলে বাড়তে পারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।এখন পযন্ত বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেহেদি হাসান নামের একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। বেশ কয়েকজন গোপনীয় ভাবে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন বলে ধারণা করছেন চিকিৎসক। গবেষণায় উঠে এসেছে ১৯টি জায়গায় এডিস মশা বেশি বসবাস করে থাকে ভি নাগপাল নামক একজন কূটপতঙ্গ বিশেষজ্ঞ। এগুলো হলো- পুরনো টায়ার,লন্ড্রি ট্যাংক,ঢাকনাবিহীন চৌবাচ্চা, ড্রাম বা ব্যারেল, অন্যান্য জলাধার,পোষা প্রাণীর পাত্র, নির্মাণাধীন ভবনের ব্লক,ফেলে রাখা বোতল ও টিনের ক্যান,গাছের ফোকর ও বাঁশ,দেয়ালে ঝুলে থাকা বোতল,ডাবের খোসা,পুরনো জুতা,ফুলের টব,পরিত্যক্ত খেলনা,ছাদে,অঙ্কুরোদগম উদ্ভিদ,বাগান পরিচর্যার জিনিসপত্র, ইটের গর্ত ও অপরিচ্ছন্ন সুইমিং পুলে এডিস মশা জন্ম নেয়।জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে,সেখানেই ডিম পারে এডিস মশা। ভাইরাস ডেঙ্গু জ্বর, হলুদ জ্বর, ওয়েস্ট নাইল জ্বর,চিকুনগুনিয়া, কারণ প্রেরণ হয় পূর্ব অশ্বতুল্য মস্তিষ্ক প্রদাহ,এবং জিকা ভাইরাস অন্য অনেক সহ,কম উল্লেখযোগ্য রোগ। এই ভাইরাসগুলির সংক্রমণ সাধারণত জ্বরের সাথে থাকে এবং কিছু ক্ষেত্রে, এনসেফালাইটিস,যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। হলুদ জ্বর থেকে সুরক্ষার জন্য একটি ভ্যাকসিন উপস্থিত রয়েছে এবং মশার কামড় প্রতিরোধের ব্যবস্থায় ডিডিটি, মশার ফাঁদ, পোকার পোকার জাল এবং মশার জাল জাতীয় কীটনাশক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।এডিস মশা খুব অল্প পানিতে (৫ মিলি বা ১ চা চামচ পানি ডিম পাড়ে যা পানি ছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। এই জন্যই লার্ভা ধ্বংসে টেমিফস ১ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে খুব কার্যকরী, যা ব্যবহার পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। নির্মাণাধীন ভবনের প্রজননস্থল ধ্বংস করে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব। চিকিৎসা নিতে আসা আজমত আলী বলেন, আমরা আজ দুই দিন ভর্তি আছি, রাত হলে মশা কামরায়, গভীররাতে বেশি লাগে। রাতে অন্ধকারে দেখা যায় না এটা কোন মশা। নিচে ড্রেনে ময়লা পানিতে অনেক মশা এগুলো রাত হলে রুমে আসে।চার পাশে পরিষ্কার রাখা দরকার। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফাতেমা তুয জান্নাত বলেন, আমরা সব ড্রেন পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। কাল কিছু অংশ পরিষ্কার করা হয়েছে।পরিষ্কার করার লোক একজন সে একা সব কাজ করতে পারে না। চেষ্টা করছি স্বল্প সময়ের মধ্যে ড্রেন,বাগান সহ যেখানে যেখানে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া যাবে সব জায়গা পরিষ্কার রাখার। ড্রেনে জমে থাকে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করা হবে।একজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে সে ঢাকায় চাকরি করেন। ঢাকা থেকে এসে এখানে ভর্তি রয়েছে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা: সবুর আলী বলেন,বিষয়টি আমরা জেনেছি কতৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করার জন্য।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মশা মারার দায়িত্ব পৌরসভার। আমরা চারটি স্প্রে মেশিন ক্রয় করেছি। ভ্যাকসিন ক্রয় করেছি। সেগুলো উপজেলার সকল ইউনিয়নের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। একটি মেশিন দুই টি ইউনিয়নে সমন্বয় করে স্প্রে করবে। হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন আর পৌরসভায় একটি স্প্রে মেশিন মশা মারার জন্য কাজ করবে।
Leave a Reply